সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলি
যে সমস্ত কার্যাবলি শিক্ষার্থীর মানসিক শক্তি বিকাশের সহায়ক এবং যেগুলি শিক্ষার্থীর সু-সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়, পাঠক্রমের সহযোগী সেইসব বিষয় বা কার্যাবলিকে বলা হয় সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলি। মনোবিদ রিভলিন (H. N. Rivlin) সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলির যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা হল- যে সব কার্যাবলি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার সামগ্রিক জীবন বিকাশের অন্যান্য দিকে সহায়তা করে তাদেরই বলা হয় সহ-পাঠক্রমিক কার্যাবলি।
সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্য
- ১) সৃজনশীল গুণাবলির বিকাশে সহায়ক: আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুপ্ত সম্ভাবনা গুলিকে বিকশিত করা।
- ২) আগ্রহ সৃষ্টিকারী: সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে।
- ৩) সর্বাঙ্গীণ বিকাশে সহায়ক: শিক্ষার্থীদের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক বিকাশে সহায়তা করে।
- ৪) একঘেয়েমি নিরসনে সহায়ক: পুথিগত শিক্ষার একঘেয়েমি দূর করে।
- ৫) শিক্ষার্থীর চাহিদা পরিপূরণে সহায়ক: বিভিন্ন শিক্ষার্থীর বিশেষ চাহিদা পূরণ করে।
- ৬) ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে সংযোগ সাধনকারী: সামাজিক সচেতনতা ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে।
- ৭) আনন্দদানে সহায়ক: শিক্ষার্থীদের তৃপ্তি ও আনন্দ দেয়।
- ৮) জাতীয়তাবোধ বিকাশে সহায়ক: জাতীয় সংহতির বিকাশে সহায়তা করে।
- ৯) আন্তর্জাতিকতাবোধের বিকাশে সহায়ক: বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে।
- ১০) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশে সহায়ক: দলগত অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চেতনা গড়ে তোলে।
সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির অপরিহার্যতা বিষয়ে যুক্তি
- ১) দর্শনগত যুক্তি: সক্রিয়তাভিত্তিক শিক্ষার জন্য সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি অপরিহার্য।
- ২) মনোবিজ্ঞানসম্মত যুক্তি: শিশুর সুপ্ত শক্তির বিকাশে সহায়ক।
- ৩) সমাজতত্ত্বগত যুক্তি: সমাজসচেতন প্রকৃত মানুষ গড়ে তোলার জন্য অপরিহার্য।
সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি কার্যকর করার বিষয়ে সুপারিশ
- ১) বিষয়টিকে মূল পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা।
- ২) অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ যারা সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি পরিচালনা করতে সক্ষম।
- ৩) সরকারের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ।
- ৪) শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে স্পষ্ট ধারণা গড়ে তোলা।
তাহলে আগামী দিনে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ফলে ছাত্রছাত্রী এবং সমাজ বিশেষভাবে উপকৃত হবে। ব্যক্তি, সমাজ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবে। শিক্ষার মূল লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।
